নীলফামারী জেলা ইতিহাস
1নীলফামারী সদর উপজেলা1 ডোমার উপজেলা2 ডিমলা উপজেলা3 জলঢাকা উপজেলা4 কিশোরগঞ্জ উপজেলা এবং5 সৈয়দপুর উপজেলা
তদন্ত কেন্দ্র সমূহঃ-
১। চিলাহাটি পৃুলিশ তদন্ত কেন্দ্র
২। মীরগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র
নীলফামারী জেলার পটভূমিঃ
কৃষি নির্ভর এই জেলায় ৯০% মানুষ কোন না কোন ভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। নীলফামারীর দিগন্ত বিস্তৃত সমতল ভুমিতে প্রতি বছর প্রচুর পরিমানে ধান, গম, আলু, তামাক এবং বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপন্ন হয়। এই জেলায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা সেচ প্রকল্প সেচ ও সম্পুরক সেচ সুবিধা দিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
নীলফামারী জেলা নামকরণের ইতিহাসঃ
ভৌগলিক সীমানাঃ
নীলফামারী জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি জেলা। এই জেলার মোট আয়তন ১,৬৪৩.৪০ বর্গ কিলোমিটার। নীলফামারী জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিনে রংপুর জেলা ও দিনাজপুর জেলা, পূর্বে লালমনিরহাট এবং পশ্চিমে দিনাজপুর ও রংপুর জেলা অবস্থিত।নীলফামারী পৌরসভা সমূহঃ
- নীলফামারী পৌরসভা
- সৈয়দপুর পৌরসভা
- ডোমার পৌরসভা
- জলঢাকা পৌরসভা
ইউনিয়নের তালিকা
নীলফামারী জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
সৈয়দপুর বাংলাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা বানিজ্যের জন্য এই শহরটি অনেক আগে থেকেই প্রসিদ্ধ এছাড়াও রেলের শহর হিসেবেও এটি পরিচিত। এই শহরের দুর্লভ একটি স্হাপত্য হচ্ছে সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ(Chini Mosjid) বা চীনা মসজিদ। চিনি মসজিদের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস,১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু ইসলামবাগ ছন ও বাঁশ দিয়ে একটি মসজিদ নির্মান করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় টিন দিয়ে এটি রূপান্তরিত করা হয়।এলাকার মানুষেরা মাসিক আয়ের একটি অংশ দিয়ে মসজিদের জন্য ফাণ্ড গঠন করে। পরবর্তীতে শঙ্কু নামের এক হিন্দু ব্যক্তি দৈনিক ১০ আনা মজুরীতে মসজিদ নতুনভাবে নির্মান শুরু করেন। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করতে থাকেন। মসজিদের গাত্রে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ, কাঁচের ভগ্নাংশ বসিয়ে ইট ও সুরকি দিয়ে নির্মান কাজ করা হতে থাকে। এই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে চিনি করা বা চিনি দানার কাজ করা। এ থেকেই এই মসজিদের নাম চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। চীনা মাটির থালার ভগ্নাংশ দিয়ে গোটা মসজিদ মোড়ানো বলে একে অনেকেই চীনা মসজিদও বলে থাকে। আর এই চিনামাটির তৈজসপত্র নিয়ে আসা হয়েছিল কলকাতা থেকে। মসজিদ নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স। মসজিদের অনন্য কারুকার্যে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়। ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপফুল, একটি বৃন্তে একটি ফুল, চাঁদ তারা মসজিদের গাত্রে খঁচিত রয়েছে। এছাড়াও মুগ্ধ হতে হয় তত্কালিন আরবীয় ক্যালিপ্ট্রা দেখে। এ মসজিদ তৈরিতে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। চিনি মসজিদের সৌন্দয্য দেশ বিদেশের প্রচুর পর্যটককে আকর্ষন করে বলেই তারা ছুটে আসেন। নিজ চোখে না দেখলে চিনি মসজিদের সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যাবে না। এ মসজিদের পিছনেই রয়েছে খ্রিষ্টানদের প্রাচীন একটি কবরস্হান।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে আসতে পারবেন। ট্রেনের ভাড়াও খুবই অল্প। এছাড়াও গাবতলী, কলেজগেট, মহাখালি থেকে সৈয়দপুর সরাসরি অনেকগুলো বাস সার্ভিস চালু আছে। এছাড়াও বিমানযোগে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে আসতে পারেন। সৈয়দপুরে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও বেঙ্গল এয়ারওয়েজ এর বেসরকারি বিমান সপ্তাহে দু’দিন চালু আছে।
পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল পালের (৭৯৫ খ্রিঃ) মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ধর্মপাল রাজ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি জলঢাকা উপজেলার উত্তর পশ্চিমে প্রায় ২০ কিঃ মিঃ দুরে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন। বহিঃশক্রর হাত থেকে রক্ষার জন্য মাটির প্রাচীর দ্বারা তিনি রাজধানীকে বেষ্টিত করেন। সেই থেকে এ স্থানের নাম হয় গড়ধর্মপাল(Dharmapal Gor)। এ স্থান থেকে প্রায় ১ মাইল পূর্বে তার রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ ও প্রায় ৩৩ বিঘা পরিমিত চন্দনপাঠের দীঘি আজো তার স্মৃতি বহন করছে। বর্তমানে এ ধ্বংসাবশেষের কোল ঘেঁষে গড়ধর্মপাল নামে আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে।
অবস্থানঃ
ডোমার রেল স্টেশন থেকে আনুমানিক ৫ মাইল পূর্ব-দক্ষিণ দেওনাই নদীর পূর্বতীরে গড় ধর্মপাল নামক গ্রামে এ গড়টি অবস্থিত৷ জলঢাকা উপজেলা থেকেও যাওয়া যায় সহজে ; যেতে হলে অটো রিক্সা করে আর ১৪/১৫ কিলো মিটার দূরে গড়ের হাট নামক জায়গায় গেলেই এই ধর্মপালের গড়ের অবস্থান পাবেন ।
নীলসাগর(Nilsagar) একটি ঐতিহাসিক দিঘি, যা বর্তমানে নীলফামারী জেলা সদর থেকে উত্তর-পশ্চিম কোণে ১৪ কিমিঃ দূরত্বে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত৷। মনে করা হয়, ঐতিহাসিক বৈদিক রাজা বিরাট এই দিঘি খনন করেন এবং তা বিরাট দিঘি হিসাবে পরিচিত ছিল৷ পরবর্তীকালে বিন্না দিঘি নামেও পরিচিতি পায়। স্বাধীনতার পর নীলসাগর নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বর্তমানে এখানে ব্যাপক সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি বত্সর শীত মৌসুমে অসংখ্য অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এই নীলসাগরে। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর কোন এক সময়ে এ জলাশয়টির খননকাজ শুরু হয়েছিল। নীল সাগর ‘বিরাট দিঘি’ ও ‘বিন্না দিঘি’ নামেও পরিচিত। হিন্দুশাস্ত্রমতে, খ্রিস্টপূর্ব নবম হতে অষ্টম শতাব্দীতে পান্ডবরা কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হন এবং মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানীর এ স্থানটিতে ছদ্মবেশে বসবাস শুরু করেন। মনে করা হয়, সেসময় নির্বাসিত পাণ্ডবদের তৃষ্ণা মেটাতে বৈদিক রাজা বিরাট এ দিঘিটি খনন করেছিলেন। বিরাট দিঘির অপভ্রংশ হিসেবে কালক্রমে এ দিঘিটি বিরাট দিঘি, বিল্টা দিঘি এবং অবশেষে বিন্না দিঘি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কারো কারো মতে, রাজা বিরাট তার বিশাল গরুর পালের জন্য পানির সংস্থান করতেই এ দিঘি খনন করেন এবং তার কন্যা বিন্নাবতীর নামে এর নামকরণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে নীলফামারীর তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ও অবসর প্রাপ্ত সচিব এম.এ জব্বার কর্তৃক এই দিঘিকে পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ও নীলফামারীর নামানুসারে বিন্না দিঘির পরিবর্তে এর নামকরণ করা হয়






