নীলফামারী জেলার ইতিহাস ।। নীলফামারী জেলার নামকরণ ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

নীলফামারী জেলা ইতিহাস

নীলফামারী জেলার ইতিহাস ।। নীলফামারী জেলার নামকরণ ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
কয়টি টি উপজেলা নিয়ে নীলফামারী জেলা গঠিত ।   ৬ টি উপজেলা নিয়ে নীলফামারী জেলা গঠিত হয়।


1নীলফামারী সদর উপজেলা
1 ডোমার উপজেলা
ডিমলা উপজেলা
3 জলঢাকা উপজেলা
4 কিশোরগঞ্জ উপজেলা এবং
5 সৈয়দপুর উপজেলা

তদন্ত কেন্দ্র সমূহঃ-

 ১। চিলাহাটি পৃুলিশ তদন্ত কেন্দ্র

 ২। মীরগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র 


নীলফামারী জেলার পটভূমিঃ


নীলফামারী জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি জেলা। নীলফামারী একটি প্রাচীন জনপদ। ১৮৭৫ সালে মহকুমা ও তা ১৯৮৪ সালে পরবর্তীতে নীলফামারী জেলায় উন্নীত হয়। ঐতিহাসিক বিভিন্ন নিদর্শন ও প্রাচীন গ্রন্থাদি থেকে এই অঞ্চলে আদিম জনবসতির অস্তিত্তের কথা জানা যায়। খ্রিষ্টপূর্ব নবম শতকে খননকৃত বিরাট রাজার দীঘি অপভ্রংশে বিন্নাদীঘি নীলফামারীর প্রাচীন ইতিহাসের স্মরণ করিয়ে দেয়। এছাড়াও বিলুপ্তপ্রায় ধর্মপালের গড়, হরিশ্চন্দের পাঠ, ভীমের মায়ের চুলা, ময়নামতির দুর্গ এ জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন।



কৃষি নির্ভর এই জেলায় ৯০% মানুষ কোন না কোন ভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। নীলফামারীর দিগন্ত বিস্তৃত সমতল ভুমিতে প্রতি বছর প্রচুর পরিমানে ধান, গম, আলু, তামাক এবং বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপন্ন হয়। এই জেলায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা সেচ প্রকল্প সেচ ও সম্পুরক সেচ সুবিধা দিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।


 


এক নজরে নীলফামারী

 রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে প্রায় ৪০০ কিঃমিঃ দুরে ১৮২১-বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এ জেলার অবস্থান,যা কর্কটক্রান্তি রেখার সামান্য উত্তরে অবস্থিত।  এ জেলার পূর্বে রংপুর ও লালমনির হাট, দক্ষিণে রংপুর ও দিনাজপুর,পশ্চিমে দিনাজপুর ও পঞ্চগড় এবং উত্তরে ভারতের শিলিগুড়ি জেলা । কৃষি নির্ভর এ জেলার ৯০% সহজ  সরল  মানুষ কোন না কোন ভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। নীলফামারীর দীগন্ত বিস্তৃত সমতল ভূমিতে প্রতি বছর  প্রচুর পরিমাণে  ধান, গম, আলু, তামাক  এবং আরও বিভিন্ন  প্রকার ফসল  উৎপন্ন হয়। 

 এ জেলায়  শিল্পী হরলাল রায়, মহেশ চন্দ্র রায়, রথীন্দ্র নাথ রায় ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর  -এর মত গুণীজনের জম্ম।এ জেলায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা সেচ প্রকল্প সেচ ও সম্পুরক সেচ সুবিধা দিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভুমিকা রাখছে।জেলার উত্তর পূর্বদিক দিয়ে বহমান তিস্তা নদী জেলার দু’টি উপজেলার (ডিমলা-জলঢাকা) জন্য এখনও অভিশাপ হিসেবে বিদ্যমান।

 বৃহত্তর রংপুর দিনাজপুরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এ জেলার সৈয়দপুর এর ক্ষুদ্র শিল্প গোটা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা সৈয়দপুরে অবস্থিত। উত্তরা ইপিজেড এলাকার কর্মসংস্থানে ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। নীলসাগর নামীয় বিশাল দিঘী এলাকার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।সম্প্রতি চালুকৃত নীলসাগর আন্তঃনগর এক্মপ্রেস ট্রেন যোগাযোগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে







 নীলফামারী জেলা নামকরণের ইতিহাসঃ


দুই শতাধিক বছর পূর্বে এই অঞ্চলে ইংরেজরা নীল চাষের খামার স্থাপন করে। এই অঞ্চলের উর্বর ভুমি নীল চাষের অনুকুল হওয়ায় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় নীলফামারীতে বেশি সংখ্যায় নীলকুঠি ও নীলখামার গড়ে উঠে। উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই দুরাকুঠি, ডিমলা,  কিশোরগঞ্জ, টেঙ্গনমারী প্রভৃতি স্থানে নীলকুঠি স্থাপিত হয়। 

সেই সময় রংপুর অঞ্চলের মধ্যে নীলফামারীতেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে শস্য উৎপাদিত হত এখানাকার উর্বর মাটির কারনে। আর এই কারনে এই অঞ্চলে ব্যাপক নীলকরদের আগমন ঘঠে। গড়ে উঠে অসংখ্য নীল খামার। বর্তমানে নীলফামারী শহরের তিন কিলোমিটার উত্তরে পুরাতন রেল স্টেশনের কাছেই ছিল একটা বড় নীলকুঠি। তাছাড়া বর্তমানে অফিসারস ক্লাব হিসেবে পরিচিত পুরাতন বাড়িটিই ছিল একটি নীলকুঠি। 

ধারনা করা হয়, স্থানীয় কৃষকদের মুখে "নিলখামার" রূপান্তরিত হয় "নীল খামারী" নামে। আর এই নিলখামারীর অপভ্রংশ হিসেবে উদ্ভব হয় নীলফামারীর নামের।

 

ভৌগলিক সীমানাঃ

নীলফামারী জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি জেলা। এই জেলার মোট আয়তন ১,৬৪৩.৪০ বর্গ কিলোমিটার। নীলফামারী জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিনে রংপুর জেলা ও দিনাজপুর জেলা, পূর্বে লালমনিরহাট এবং পশ্চিমে দিনাজপুর ও রংপুর জেলা অবস্থিত।

নীলফামারী পৌরসভা সমূহঃ


নীলফামারী জেলায় মোট ৪ টি পৌরসভা রয়েছে। এগুলো নিচে দেওয়া হল 
  1. নীলফামারী পৌরসভা
  2. সৈয়দপুর পৌরসভা
  3. ডোমার পৌরসভা
  4. জলঢাকা পৌরসভা 


ইউনিয়নের তালিকা


নীলফামারী সদর উপজেলার ইউনিয়ন  সমূহঃ

 ০১। ১ নং চওড়া বড়গাছা ইউনিয়ন 
০২।২ নং গোড়গ্রাম ইউনিয়ন 
০৩। ৩ নং খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন 
০৪। ৪ নং পলাশবাড়ী ইউনিয়ন 
০৫। ৫নং টুপামারী ইউনিয়ন 
০৬। ৬ নং রামনগর ইউনিয়ন 
০৭।৭ নং কচুকাটা ইউনিয়ন 
০৮। ৮ নং পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন 
০৯। ৯ নং ইটাখোলা ইউনিয়ন 
১০। ১০ নং কুন্দপুকুর ইউনিয়ন 
১১। ১১ নং সোনারায় ইউনিয়ন
 ১২। ১২ নং সংগলশী ইউনিয়ন
 ১৩। ১৩ নং চড়াইখোলা ইউনিয়ন
 ১৪। ১৪ নং চাপড়া সরঞ্জানী ইউনিয়ন
 ১৫। ১৫ নং লক্ষীচাপ ইউনিয়ন



 সৈয়দপুর উপজেলার ইউনিয়ন সমূহঃ 

০১। ১নং কামারপুকুর ইউনিয়ন
 ০২। ২ নং কাশিরামবেলপুকুর ইউনিয়ন 
০৩। ৩ নং বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন 
০৪। ৪ নং বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন 
০৫। ৫ নং খাতামধুপুর ইউনিয়ন


 ডিমলা উপজেলা :-


 ০১।১নং পশ্চিশ ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ।
 ০২। ২নং বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ । 
০৩। ৩নং ডিমলা ইউনিয়ন পরিষদ। 
০৪। ৪নং খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ।
 ০৫।৫নং গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। 
০৬।৬নং নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদ। 
০৭। ৭নং খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদ।
 ০৮। ৮নং ঝুনাগাছ ইউনিয়ন পরিষদ। 
০৯। ৯নং টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। 
১০। ১০নং পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ।


 ডোমার উপজেলার ইউনিয়নসমূহঃ 


০১।১ নং ভোগডাবুড়ি 
০২।২ নং কেতকীবাড়ী 
০৩।৩ নং গোমনাতি 
০২।৪ নং জোড়াবাড়ী 
০৫। ৫ নং বামুনীয়া
 ০৬।৬ নং পাংগা মটকপুর 
০৭। ৭ নং বোড়াগাড়ী 
০৮। ৮ নং ডোমার
 ০৯। ৯ নং সোনারায় 
১০।১০ নং হরিণচড়া 



জলঢাকা উপজেলা :-



 ১ নং ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ।
 ২ নং গোলমুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ। 
৩ নং বালাগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ। 
৪ নং গোলনা ইউনিয়ন পরিষদ। 
৫ ধর্মপাল ইউনিয়ন পরিষদ।
 ৬ নং শিমুল বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ।
 ৭ নং মীরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ।
 ৮ নং কাঁঠালী ইউনিয়ন পরিষদ। 
৯ নং খুটামারা ইউনিয়ন পরিষদ। 
১০ নং শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ । 
১১ নং কৈমারী ইউনিয়ন পরিষদ।



 কিশোরগঞ্জ উপজেলা :-



 ১ নং বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদ।
 ২ নং পুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদ।
 ৩ নং নিতাই ইউনিয়ন পরিষদ।
 ৪ নং বাহাগিলি ইউনিয়ন পরিষদ। 
৫ নং চাঁদখানা ইউনিয়ন পরিষদ। 
৬ নং কিশোরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ।
 ৭ নং রনচন্ডি ইউনিয়ন পরিষদ । 
৮ নং গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ। 
৯ নং মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদ।

নীলফামারী জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ



বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত ঘেষা প্রাচীন শহর নীলফামারী জেলার। নীল চাষের জন্য উর্বর হওয়ায় এখানে বেশি সংখ্যায় নীলকুঠি ও নীল খামার গড়ে ওঠে। আর নীল খামার থেকে বর্তমানের নীলফামারী। ধর্মপালের রাজবাড়ি/গড়, ময়নামতি দুর্গ, ভীমের মায়ের চুলা, ডিমলা রাজবাড়ী, হরিশচন্দ্রের পাঠ, সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ, তিস্তা ব্যারেজ ও সেচ প্রকল্প, নীলফামারী জাদুঘর, কুন্দুপুকুর মাজার, দুন্দিবাড়ী স্লুইসগেট, বাসার গেট, ও তিন বিঘা করিডোর ও দহগ্রাম-আংগরপোতা ছিটমহল বেড়ানোর জন্য বেশ জনপ্রিয়।



হরিশ্চন্দ্রের পাঠ – নীলফামারী
]





জলঢাকা থানার খুটামারা ইউনিয়নের অন্তর্গত পাথর খন্ডে পরিপূর্ণ সুপ্রাচীন ধ্বংসাবশেষ টিলা হরিশচন্দ্রের পাঠ বা রাজবাড়ী(Harishchandra Padh/ Rajbari)। এটি চাড়াল কাটা নদীর দক্ষিণ তীরে প্রায় এক বিঘা জমির উপর উঁচু ঢিবি। ঢিবির উপর পাঁচ খন্ড বড় কাল পাথর জড়ে আছে। পাথরগুলো ঢিবির মাটিতে ডুবে যায় আবার ভেসে উঠে বলে পার্শ্ববর্তী স্থানের অধিবাসীদের বিশ্বাস।হরিশচন্দ্র পাঠ বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের একটি গ্রাম। একে সেখানকার রাজা হরিশচন্দ্রের নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়। রাজা হরিশচন্দ্র দানবীর হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ অঞ্চলে তাকে নিয়ে অনেক পালাগান,যাত্রাপালা রচিত হয়েছে। কথিত আছে রাজা হরিশ্চন্দ্রের কন্যা অধুনা’র সাথে রাজা গোপী চন্দ্রের বিয়ে হয়। তৎকালীন প্রথা অনুসারে গোপী চন্দ্র দান হিসেবে তার ছোট শ্যালিকা পদুনাকেও পান। এ নিয়েও অনেক গল্প প্রচলিত আছে।হরিশচন্দ্র পাঠ গ্রামে অনেক প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ আজও তার স্মৃতি বহন করছে। হরিশচন্দ্রের শিবমন্দিরে বছরে ৩টি উৎসব এই মন্দিরকে ঘিরে বেশ ধুমধাম করে পালিত হয়। কিভাবে যাবেনঃ নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্র পাঠে যাওয়া যায়। তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,   সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারী 22, 2018




কুন্দ পুকুর মাজার – নীলফামারী








নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দুপুকুর ইউনিয়নে ’কুন্দুপুকুর মাজার’(Kunda Pokur Mazar) অবস্থিত। সূদুর পারস্য হতে এ এলাকায় ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য হযরত মহিউদ্দিন চিশ্‌তি (রাঃ) আসেন। ইসলামের এ মহান সাধকের মাজার‘ কুন্দুপুকুর মাজার’ হিসাবে পরিচিত । জেলা সদর থেকে দুরত্ব ৫ কিঃমিঃ। এখানে একটি মসজিদ, একটি হেফজখানা, একটি বড় পুকুর আছে। হেফজখানায় ১৭ জন ছাত্র হেফজ করছেন। প্রতি বছর ৫ মাঘ এখানে বার্ষিক ওরশ হয়। ওরশে দূর দুরান্ত থেকে অসংখ্য ভক্ত এখানে আসেন। নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ৫ সদস্যের এডহক কমিটি মাজার পরিচালনা করছেন। কিভাবে যাওয়া যায়ঃ নীলফামারী শহর থেকে সড়কপথে কুন্দপুকুর মাজার শরীফে যাওয়া যায়। তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,   সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারী 22, 2018


চিনি মসজিদ – নীলফামারী




সৈয়দপুর বাংলাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা বানিজ্যের জন্য এই শহরটি অনেক আগে থেকেই প্রসিদ্ধ এছাড়াও রেলের শহর হিসেবেও এটি পরিচিত। এই শহরের দুর্লভ একটি স্হাপত্য হচ্ছে সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ(Chini Mosjid) বা চীনা মসজিদ। চিনি মসজিদের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস,১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু ইসলামবাগ ছন ও বাঁশ দিয়ে একটি মসজিদ নির্মান করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় টিন দিয়ে এটি রূপান্তরিত করা হয়।এলাকার মানুষেরা মাসিক আয়ের একটি অংশ দিয়ে মসজিদের জন্য ফাণ্ড গঠন করে। পরবর্তীতে শঙ্কু নামের এক হিন্দু ব্যক্তি দৈনিক ১০ আনা মজুরীতে মসজিদ নতুনভাবে নির্মান শুরু করেন। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করতে থাকেন। মসজিদের গাত্রে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ, কাঁচের ভগ্নাংশ বসিয়ে ইট ও সুরকি দিয়ে নির্মান কাজ করা হতে থাকে। এই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে চিনি করা বা চিনি দানার কাজ করা। এ থেকেই এই মসজিদের নাম চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। চীনা মাটির থালার ভগ্নাংশ দিয়ে গোটা মসজিদ মোড়ানো বলে একে অনেকেই চীনা মসজিদও বলে থাকে। আর এই চিনামাটির তৈজসপত্র নিয়ে আসা হয়েছিল কলকাতা থেকে। মসজিদ নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স। মসজিদের অনন্য কারুকার্যে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়। ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপফুল, একটি বৃন্তে একটি ফুল, চাঁদ তারা মসজিদের গাত্রে খঁচিত রয়েছে। এছাড়াও মুগ্ধ হতে হয় তত্‍কালিন আরবীয় ক্যালিপ্ট্রা দেখে। এ মসজিদ তৈরিতে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। চিনি মসজিদের সৌন্দয্য দেশ বিদেশের প্রচুর পর্যটককে আকর্ষন করে বলেই তারা ছুটে আসেন। নিজ চোখে না দেখলে চিনি মসজিদের সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যাবে না। এ মসজিদের পিছনেই রয়েছে খ্রিষ্টানদের প্রাচীন একটি কবরস্হান।

 

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে আসতে পারবেন। ট্রেনের ভাড়াও খুবই অল্প। এছাড়াও গাবতলী, কলেজগেট, মহাখালি থেকে সৈয়দপুর সরাসরি অনেকগুলো বাস সার্ভিস চালু আছে। এছাড়াও বিমানযোগে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে আসতে পারেন। সৈয়দপুরে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও বেঙ্গল এয়ারওয়েজ এর বেসরকারি বিমান সপ্তাহে দু’দিন চালু আছে।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
 
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারী 22, 2018

ধর্মপালের গড় – নীলফামারী



পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল পালের (৭৯৫ খ্রিঃ) মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র ধর্মপাল রাজ সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি জলঢাকা উপজেলার উত্তর পশ্চিমে প্রায় ২০ কিঃ মিঃ দুরে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন। বহিঃশক্রর হাত থেকে রক্ষার জন্য মাটির প্রাচীর দ্বারা তিনি রাজধানীকে বেষ্টিত করেন। সেই থেকে এ স্থানের নাম হয় গড়ধর্মপাল(Dharmapal Gor)। এ স্থান থেকে প্রায় ১ মাইল পূর্বে তার রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ ও প্রায় ৩৩ বিঘা পরিমিত চন্দনপাঠের দীঘি আজো তার স্মৃতি বহন করছে। বর্তমানে এ ধ্বংসাবশেষের কোল ঘেঁষে গড়ধর্মপাল নামে আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে।

অবস্থানঃ

ডোমার রেল স্টেশন থেকে আনুমানিক ৫ মাইল পূর্ব-দক্ষিণ দেওনাই নদীর পূর্বতীরে গড় ধর্মপাল নামক গ্রামে এ গড়টি অবস্থিত৷ জলঢাকা উপজেলা থেকেও যাওয়া যায় সহজে ; যেতে হলে অটো রিক্সা করে আর ১৪/১৫ কিলো মিটার দূরে গড়ের হাট নামক জায়গায় গেলেই এই ধর্মপালের গড়ের অবস্থান পাবেন ।

তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,
 
সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারী 22, 2018

নীলসাগর – নীলফামারী


নীলসাগর(Nilsagar) একটি ঐতিহাসিক দিঘি, যা বর্তমানে নীলফামারী জেলা সদর থেকে উত্তর-পশ্চিম কোণে ১৪ কিমিঃ দূরত্বে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত৷। মনে করা হয়, ঐতিহাসিক বৈদিক রাজা বিরাট এই দিঘি খনন করেন এবং তা বিরাট দিঘি হিসাবে পরিচিত ছিল৷ পরবর্তীকালে বিন্না দিঘি নামেও পরিচিতি পায়। স্বাধীনতার পর নীলসাগর নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বর্তমানে এখানে ব্যাপক সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি বত্‍সর শীত মৌসুমে অসংখ্য অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এই নীলসাগরে। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর কোন এক সময়ে এ জলাশয়টির খননকাজ শুরু হয়েছিল। নীল সাগর ‘বিরাট দিঘি’ ও ‘বিন্না দিঘি’ নামেও পরিচিত। হিন্দুশাস্ত্রমতে, খ্রিস্টপূর্ব নবম হতে অষ্টম শতাব্দীতে পান্ডবরা কৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাস ও ১ বছরের অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হন এবং মৎস্য দেশের রাজা বিরাটের রাজধানীর এ স্থানটিতে ছদ্মবেশে বসবাস শুরু করেন। মনে করা হয়, সেসময় নির্বাসিত পাণ্ডবদের তৃষ্ণা মেটাতে বৈদিক রাজা বিরাট এ দিঘিটি খনন করেছিলেন। বিরাট দিঘির অপভ্রংশ হিসেবে কালক্রমে এ দিঘিটি বিরাট দিঘি, বিল্টা দিঘি এবং অবশেষে বিন্না দিঘি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কারো কারো মতে, রাজা বিরাট তার বিশাল গরুর পালের জন্য পানির সংস্থান করতেই এ দিঘি খনন করেন এবং তার কন্যা বিন্নাবতীর নামে এর নামকরণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে নীলফামারীর তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ও অবসর প্রাপ্ত সচিব এম.এ জব্বার কর্তৃক এই দিঘিকে পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ও নীলফামারীর নামানুসারে বিন্না দিঘির পরিবর্তে এর নামকরণ করা হয় 


নীলসাগর। নীলসাগরের আকর্ষণঃ 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই মূলত নীলসাগর বিখ্যাত। এর পাড়ে রয়েছে নারকেল, বনবাবুল, আকাশমণি, মেহগনি, শিশুসহ অজানা-অচেনা হরেকরকম ফুল ও ফলের সারি সারি বৃক্ষরাজি। শীতকালে বিভিন্ন দেশের রাজহাঁস, মার্গেঞ্জার, মাছরাঙা, ভুবনচিল, সবুজ চান্দি ফুটকি, বাচাল নীল ফুটকি ইত্যাদি অতিথি পাখিদের সমাগমও বৃদ্ধি পায়, এছাড়াও পাশেই রয়েছে একটি ছোট পার্ক। ১৯৯৮ সালে এ এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব রাশেদ মোশারফ এ অভয়ারণ্যের উদ্বোধন করেন। এখানে প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সনাতন (হিন্দু) সম্প্রদায় বারুণী স্নান উৎসবের আয়োজন করে থাকে। দিঘির পাশেই সরকারের অনুদানে একটি রেস্টহাউজ স্থাপন করা হয়েছে।

অবস্থানঃ 
সদর উপজেলার জিরো পয়েন্ট চৌরঙ্গী মোড় থেকে উত্তর-পশ্চিম কোণে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোবাডাঙ্গা মৌজায় ৫৩.৯০ একর জমির ওপর নীলসাগরের অবস্থান। এর জলভাগ ৩২.৭০ একর, এবং চারদিকের পাড়ের জমির পরিমাণ ২১ একরের মতো। তথ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপনায়: সাফায়েত,   সর্বশেষ আপডেট হয়েছে: ফেব্রুয়ারী 22, 2018


Post a Comment

Previous Post Next Post
IFRAME SYNC
IFRAME SYNC
IFRAME SYNC

Contact Form