পাবনা জেলার ইতিহাস

পাবনা জেলার ইতিহাস
 বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল।[২]
পাবনা
জেলা



বাংলাদেশে পাবনা জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৪′৩৬.০″ উত্তর ৮৮°৫৫′৪৮.০″ পূর্ব উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগরাজশাহী বিভাগ
আয়তন
 • মোট২৩৭১.৫০ কিমি(৯১৫.৬৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট২৮,৬০,৫৪০
 • ঘনত্ব১২০০/কিমি (৩১০০/বর্গমাইল)
স্বাক্ষরতার হার
 • মোট৯৮.৪৭%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫০ ৭৬
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট Edit this at Wikidata

উপজেলা সমূহসম্পাদনা

ভৌগোলিক সীমানাসম্পাদনা

বাংলাদেশে অবস্থিত পাবনা জেলা রাজশাহী বিভাগেরদক্ষিণ-পূর্ব কোণ সৃষ্টি করেছে। এটি ২৩°৪৮′ হতে ২৪°৪৭′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০২′ হতে ৮৯°৫০′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর উত্তর দিক ঘিরে আছে সিরাজগঞ্জ জেলা আর দক্ষিণে পদ্মা নদী একে ফরিদপুর ও কুষ্টিয়া জেলা হতে পৃথক করেছে। এর পূর্ব প্রান্তদিয়ে যমুনা নদী বয়ে গেছে এবং পশ্চিমে নাটোর জেলা। পাবনার আমিনপুর থানার কাজীরহাট নামক স্থানে পদ্মা ও যমুনা নদী পরস্পর মিলিত হয়েছে।

জলবায়ুসম্পাদনা

পাবনা-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাসজানুফেব্রুমার্চএপ্রিলমেজুনজুলাইআগস্টসেপ্টেঅক্টোনভেডিসেবছর
সর্বোচ্চ °সে (°ফা) গড়২৫٫৩
(৭৮)
২৮٫৫
(৮৩)
৩৩٫৬
(৯২)
৩৬٫৭
(৯৮)
৩৫٫২
(৯৫)
৩২٫৭
(৯১)
৩১٫৭
(৮৯)
৩১٫৮
(৮৯)
৩২٫২
(৯০)
৩১٫৬
(৮৯)
২৯٫১
(৮৪)
২৬٫৪
(৮০)
৩১٫২৩
(৮৮٫২)
সর্বনিম্ন °সে (°ফা) গড়১১٫৬
(৫৩)
১৩٫৯
(৫৭)
১৮٫৫
(৬৫)
২২٫৮
(৭৩)
২৪٫৬
(৭৬)
২৫٫৬
(৭৮)
২৫٫৯
(৭৯)
২৬٫৪
(৮০)
২৬٫২
(৭৯)
২৩٫৬
(৭৪)
১৭٫৫
(৬৪)
১২٫৯
(৫৫)
২০٫৭৯
(৬৯٫৪)
গড় অধঃক্ষেপণ মিমি (ইঞ্চি)১৯
(০٫৭৫)
১৮
(০٫৭১)
৩৪
(১٫৩৪)
৫৬
(২٫২)
১৫৯
(৬٫২৬)
৩০০
(১১٫৮১)
২৬০
(১০٫২৪)
২৯৪
(১১٫৫৭)
২৪২
(৯٫৫৩)
২০১
(৭٫৯১)
১৭
(০٫৬৭)

(০٫১২)
১,৬০৩
(৬৩٫১১)
উৎস: Climate-data.org

প্রশাসনিক এলাকাসমূহসম্পাদনা

ইতিহাসসম্পাদনা

১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে পাবনা স্বীকৃতি লাভ করে। ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দের দিকে জেলার বেশির ভাগ অংশ রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখনকার দিনে এসব এলাকায় সরকারের দায়িত্বপূর্ণ কর্মচারীদের খুব অভাব ছিল। পুলিশের অযোগ্যতা এবং জমিদারদের পক্ষ থেকে ডাকাতি ঘটনার তথ্য গোপন রাখা বা এড়িয়ে যাওয়া হতো। গ্রামাঞ্চলে ডাকাতেরা দলে দলে ঘুরে বেড়াত। চলনবিল এলাকায় জলদস্যুদের উপদ্রব চলছিল দীর্ঘ দিন ধরে। এদের প্রতিরোধ করতে ও শাসনতান্ত্রিক সুবন্দোবস্তের জন্যে কোম্পানি সরকারের মন্তব্য অনুসারে পাবনায় সামগ্রিক ভাবে ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে তা স্থায়ী রূপ লাভ করে এবং তাকে স্বতন্ত্র ডিপুটি কালেক্টর রুপে নিয়োগ করা হয়।
রাজশাহী জেলার ৫টি থানা ও যশোর জেলার ৩টি থানা নিয়ে সর্ব প্রথম পাবনা জেলা গঠিত হয়। সময় সময় এর এলাকা ও সীমানার পরিবর্তন ঘটেছে। ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের ২১ নভেম্বর যশোরের খোকসা থানা পাবনা ভুক্ত করা হয়। অন্যান্য থানা গুলোর মধ্যে ছিল রাজশাহীর খেতুপাড়া, মথুরা, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ ও পাবনা। ‘যশোরের চারটি থানা ধরমপুর, মধুপুর, কুস্টিয়া ও পাংশা’। তখন পশ্চিম বাংলার মালদহ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ ডব্লিউ মিলস জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিযুক্ত হন পাবনায়। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে সেশন জজের পদ সৃষ্টি হলে এ জেলা রাজশাহীর দায়রা জজের অধীনে যায়। ১৮৪৮ খৃস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর জেলার পূর্ব সীমা নির্দিস্ট করা হয় যমুনা নদী। ১২ জানুয়ারি ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সিরাজগঞ্জ থানাকে মোমেনশাহী জেলা থেকে কেটে নিয়ে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে মহকুমায় উন্নীত করে পাবনা ভুক্ত করা হয়। নিযুক্ত করা হয় ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। এর ২০ বছর পর রায়গঞ্জ থানা এ জেলায় সামিল হয়।
নীল বিদ্রোহ চলাকালে শান্তি শৃংখলার অবনতি হলে লর্ড ক্যানিং ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে জেলায় একজন কালেক্টর নিযুক্ত করেন। এর আগে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে জেলা প্রশাসক হয়ে আসেন টি.ই. রেভেন্স। ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে সিরাজগঞ্জ ও ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে পাবনায় মিউনিসিপ্যালিটি গঠিত হয়। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত হয় জেলা বোর্ড। যখন কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটে তখন স্বভাবতই এ জেলা ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে বৃটিশ সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী মহারাণী ডিক্টোরিয়ার শাসনাধীনে চলে যায়। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে পাংশা, খোকসা ও বালিয়াকান্দি এই তিনটি থানা নিয়ে পাবনার অধীনে কুমারখালী মহকুমা গঠন করা হয়। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে কুষ্টিয়া থানা এ জেলা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে পাংশা থানা ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমায় এবং কুমারখালী থানা কুষ্টিয়া মহকুমার সাথে সংযুক্ত করা হয়। এ ভাবে এ জেলার দক্ষিণ সীমানা হয় পদ্মা নদী। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে কুমারখালী থানা সৃষ্টি হলে তা ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে পাবনার একটি মহকুমা হয়। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে মহকুমা অবলুপ্ত করে কুষ্টিয়া মহকুমার অংশ করা হয়। ১৮৭৯ তে জজ আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে কয়েকটি থানা বদলে যায়।
পাবনা নামের উদ্ভব সম্পর্কে বিশেষ ভাবে কিছু জানা যায় না। তবে বিভিন্ন মতবাদ আছে। প্রত্নতাত্মিক কানিংহাম অনুমান করেন যে, প্রাচীন রাজ্য পুন্ড্র বা পুন্ড্রবর্ধনের নাম থেকে পাবনা নামের উদ্ভব হয়ে থাকতে পারে। তবে সাধারণ বিশ্বাস পাবনী নামের একটি নদীর মিলিত স্রোত ধারার নামানুসারে এলাকার নাম হয় পাবনা।

জনসংখ্যাসম্পাদনা

মোট জনসংখ্যা ২৬,২৪,৬৮৪ জন । [৩]
  • পুরুষ ১৩,১৩,৭৭১,
  • মহিলা ১৩,১০,৯১৩,
  • মুসলিম ৯৫.১২%,
  • হিন্দু ৪.৫০%,
  • খ্রীষ্টান ০.২২%,
  • অন্যান্য ০.১৬%।

সাধারণ তথ্যাবলীসম্পাদনা

  • উপজেলার সংখ্যা ৯টি
  • থানার সংখ্যা ১১টি
  • পৌরসভার সংখ্যা ১০টি (কাশীনাথপুর পৌরসভা)
  • গ্রামের সংখ্যা ১,৫৪৯টি
  • ইউনিয়নের সংখ্যা ৭৪টি[৪]

যোগাযোগ ব্যবস্থাসম্পাদনা

এই জেলার সড়ক, স্থল, জলপথ ও বিমানপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।
পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল কাছাকাছি পাবনা রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। কাছাকাছি রেল স্টেশনগুলি তেবুনিয়া, চাটমোহর উপজেলা ও ঈশ্বরদী উপজেলায় অবস্থিত। ঈশ্বরদী উপজেলা উত্তর বাংলার এবং বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলওয়ে শাখা। এই জেলায় নয়টি রেলওয়ে স্টেশন আছে: ঈশ্বরদী, ঈশ্বরদী বাইপাস, পাকশি, মুলাদুলী, চাটমোহর, ভঙ্গুর, বরল সেতু, শারত নগর, দিলপশার এবং গুয়াকারা। পাবনা টু ঢালারচর নতুন রেল রাস্তা তৈরী হচ্ছে। যার অর্ধেক কাজ প্রায় শেষ। [৫]
ঈশ্বরদী উপজেলায় একটি বিমানবন্দর রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঈশ্বরদীতে সপ্তাহে দুইবার বিমান পরিচালনা করত। তবে, এই মুহূর্তে কোনও উড়োজাহাজ কোম্পানি ঈশ্বরদীতে কোন বিমান পরিচালনা করছে না। এছাড়াও পানিপথে আরিচা - কাজিরহাট হয়ে দিনে বেশ কয়েকটি লঞ্চ ও স্পীডবোর্ড
চলাচল করে। যার ফলে রাজধানী থেকে খুব সহজে পাবনা যাতাযাত করা যায়।

কীর্তিমান ব্যক্তিত্বসম্পাদনা

কুখ্যাত ব্যক্তিত্বসম্পাদনা

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকার। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, তিনি পাকিস্তানীদের পক্ষে যোগ দেন। এই সময় তিনি পাবনাতে প্রত্যক্ষভাবে গণহত্যার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বুদ্ধিজীবী হত্যার ক্ষেত্রে তিনি মূখ্য ভূমিকা রাখেন।
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিজামী এবং দলের আরো কয়েকজন প্রধান নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।

চিত্তাকর্ষক স্থানসম্পাদনা


ঐতিহাসিক তাড়াশ ভবন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

পত্রিকাসম্পাদনা

Pabnareport24.com, দৈনিক ইছামতি, দৈনিক স্বতকন্ঠ, দৈনিক পাবনা বার্তা, দৈনিক জীবন কথা, দৈনিক বিবৃতি, দৈনিক সিনসা, সাপ্তাহিক ঈশ্বরদী, সময়ে ইতিহাস, পদ্মার খবর, মিরকামারী নিউজ, সাপ্তাহিক বাঁশপত্র, প্রযুক্তির সূর্য,pabnanews24.com

অর্থনীতিসম্পাদনা

পাবনার অর্থনীতি বেশ সমৃদ্ধ। এখানে প্রচুর ছোটবড় শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। যেমন,
  • স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড
  • স্কয়ার ট্রয়লেটিজ লিমিটেড
  • স্কয়ার কনজুমার প্রডাক্ট লিমিটেড
  • ইউনিভার্সাল ফুড লিমিটেড
  • নিয়ন ফার্মা
  • রশিদ রাইস ব্রান ওয়েল
  • বেঙ্গল মিট
  • আসলাম এগ্রো ফুড
  • গাভী মার্কা সিমেন্ট
এছাড়া পাবনা শহরে বিসিক শিল্প নগরী রয়েছে যেখানে যথেষ্ট সংখ্যক শিল্প কারখানা আছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post
IFRAME SYNC
IFRAME SYNC
IFRAME SYNC

Contact Form