ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস

ঠাকুরগাঁও জেলার ইতিহাস 



ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট পাঁচটি উপজেলা রয়ছে। এগুলো হলঃ
    1. ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা
    2. বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা
    3. পীরগঞ্জ উপজেলা
    4. রানীশংকৈল এবং
    5. হরিপুর

      ঠাকুরগাঁও জেলার পটভূমি ও নামকরণঃ


      ছোট জেলা হলেও ঠাকুরগাঁও একটি প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জনপদ। ১৮০০ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে টাঙ্গন, শুক, কুলিক, পাথরাজ ও ঢেপা বিধৌত এই জনপদের একটি ঠাকুর পরিবারের উদ্যোগে বর্তমানে পৌরসভা এলাকার কাছাকাছি কোন একটি স্থানে থানা স্থাপন করা হয়। তাদের নাম অনুসারে থানাটির নাম হয় ঠাকুরগাঁও থানা। 'ঠাকুর' অর্থাৎ ব্রাহ্মণদেরসংখ্যাধিক্কের কারনে স্থানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়ছে। ১৮৬০ সালের প্রথম দিকে এটি মহকুমা হিসেবে ঘোষিত হয়। এর অধীনে সে সময় ছয়টি থানা ছিল, এগুল হলঃ ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, হরিপুর ও আটোয়ারি। ১৯৪৭ সালে এই ছয়টি থানা, ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার ৩টি থানা ও কোচবিহারের একটি থানা, এই মোট ১০টি থানা নিয়ে মহকুমা হিসেবে ঠাকুরগাঁও নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে।




      কিন্তু ১৯৮১ সালে আটোয়ারি, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেতুলিয়া নিয়ে পঞ্চগড় আলাদা মহকুমা হলে ঠাকুরগাঁও পাঁচটি থানায় সংকুচিত হয়। থানাগুলি হচ্ছেঃ ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল ও হরিপুর। ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী এই পাঁচটি থানা ঠাকুরগাঁও জেলা যাত্রা শুরু করে।

      ঠাকুরগাঁও একটি প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জনপদ। এখানে যেমন উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, তেমনিভাবে বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলমান শাসনামলে বিভিন্নমুখী পরিবর্তনের ছোয়া রয়েছে এখানে। জেলার অতী প্রাচীন পুকুরগুলি ও গড়গুলির অস্তিত্ব সুপ্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন তুলে ধরে। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা লাভের পর বরেন্দ্রভূমির অন্যান্য জেলার মতই ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষ ক্রমান্বয়ে উন্নততর যোগাযোগ বাবস্থা ও উন্নয়নের অন্যান্য সুফল লাভে সক্ষম হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধির পথে।
       

      জেলার নামকরণের প্রচলিত আরেকটি ইতিহাসঃ

      ধারনা করা হয় নিশ্চিন্তপুর থেকে ঠাকুরগাঁও নামটি এসেছে। ঠাকুরগাঁও জেলার নামটি যে নিশ্চিন্তপুর থেকেই এসেছে তার সঠিক কোন ব্যাখ্যা না থাকলেও জনশ্রুতি ও মৌজার নাম নিশ্চিন্তপুর হওয়ায় অনুমান করা হত ঠাকুরগাঁও একসময়ে নিশ্চিন্তপুর নামেই পরিচিত ছিল। ১৭ শ শতাব্দীর কোচবিহারের মানচিত্রে সংলগ্ন এলাকার যে অবস্থান দেখানো হয়েছে তাতে ঠাকুরগাঁও ও নিশ্চিন্তপুর নামে দুটি আলাদা জায়গা দেখানো হয়েছে। টাঙ্গন নদীর  পূর্ব প্রান্তে দেখানো হয়েছে নিশ্চিন্তপুর এবং কিছুটা উত্তর-পূর্বে টাঙ্গন নদীর পশ্চিম প্রান্তে দেখানো হয়েছে ঠাকুরগাঁও। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, টাঙ্গন নদীর পূর্ব প্রান্তের নিশ্চিন্তপুরকেই পরবর্তীতে ঠাকুরগাঁও নাম দিয়ে সদরের নামকরন করা হয়। আর এর মাধ্যমেই  নিশ্চিন্তপুর রূপান্তরিত হয় ঠাকুরগাঁওয়ে।

      ঠাকুরগাঁও জেলার প্রশাসনিক কাঠামোঃ

      ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে পাঁচটি উপজেলা ও ছয়টি থানা (পাঁচটি উপজেলা ও থানাঃ রুহিয়া)। পৌরসভা রয়েছে তিনটি, এগুলো হলঃ ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ ও রানীশংকৈল। ইউনিয়ন এর সংখ্যা ৫৩ টি, মৌজার সংখ্যা ৬৪৭টি, গ্রামের সংখ্যা ১,০১৬ টি।


      Post a Comment

      Previous Post Next Post
      IFRAME SYNC
      IFRAME SYNC
      IFRAME SYNC

      Contact Form